প্রশ্ন- ৮: প্রজ্ঞা পারমিতা ব্যাখ্যা কর।
অথবা, প্রজ্ঞা পারমিতা বলতে শান্তিদেব কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর:
ভূমিকা : মানবতার পূর্ণ বিকাশে বৌদ্ধদর্শনে যে সাধনা বা অনুশীলন বা চর্চার কথা বলা হয়ে থাকে তার নাম ষটপারমিতা। পরিমিতা শব্দের অর্থ যা সর্বাপেক্ষা উৎকর্ষ প্রাপ্ত হয়েছে। পালি বৌদ্ধ শাস্ত্রে দশ পারমিতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মহাযান বৌদ্ধদর্শনে দশ পারমিতার স্থলে ছয় পারমিতার কথা বলা হয়েছে। এ ছয়টি পারমিতা মহাযান বৌদ্ধধর্ম দর্শনে ঘটপারমিতা নামে পরিচিত। এ ষটপারমিতার সর্বশেষ স্তর হলে। প্রজ্ঞা পারমিতা।
প্রজ্ঞা পারমিতা : ধ্যান ও প্রজ্ঞা- এ দুটির সম্মিলিত চর্চার মাধ্যমে নির্বাণ লাভ করা যেতে পারে। পূর্বোক্ত পঞ্চবিধ ষটপারমিতার শেষোক্তটি হলো ধ্যান পারমিতার অনুশীলন বা চর্চার দ্বারা সাধক জগতের সমস্ত রহস্য ও অজানা বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করতে পারে। সাধক যে কোন বিষয় প্রজ্ঞা পারমিতার চর্চা দ্বারা সত্য উদঘাটন ও অনুধাবন করতে পারে। সাধক দিব্য জ্ঞানলাভ করতে পারে প্রজ্ঞা পারমিতার মধ্য দিয়ে। সুতরাং সাধকের কাছে বুদ্ধত্ব ও ইহত্বের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
শান্তিদেব প্রজ্ঞা পারমিতা সম্পর্কে বলেন, পঞ্চ পারমিতার সাধনা দ্বারা ভক্তের মাঝে প্রজ্ঞার উদয় হয়। তবে দুঃখাদি বাসনা, পরোপকার মর্ষণ, ধর্মনিধ্যান, বীর্য ও ধ্যান এ পঞ্চবিধ পারমিতার সুনিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল অনুশীলন ছাড়া প্রজ্ঞা বা জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব নয়। এ পঞ্চ পারমিতার উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে প্রজ্ঞা পারমিতা অর্জন সম্ভব।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ষটপারমিতার সর্বশেষ স্তর হলো প্রজ্ঞা পারমিতা। পঞ্চ পারমিতার চর্চা বা অনুশীলনের মাধ্যমেই প্রজ্ঞা পারমিতার জ্ঞান অর্জন সম্ভব হয়। সুতরাং প্রজ্ঞা পারমিতা বৌদ্ধদর্শনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
No comments:
Post a Comment